প্রথমের হিসাব প্রথমে, জি এর মানে কি? 'জি' মানে জেনারেশন বা প্রজন্ম। মোবাইল প্রযুক্তির প্রজন্ম, যা মোবাইল ফোন এবং এর নেটওয়ার্কে ইনস্টল করা হয়ে থাকে। প্রতিটি নতুন 'জি'-এর জন্য আপনাকে নতুন একটি ফোন কিনতে হবে আর নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে ব্যয়বহুল আপগ্রেডের। প্রথম দুটির একটি ছিল অ্যানালগ সেল ফোন ওয়ান জি বা প্রথম প্রজন্ম এবং অপরটি ডিজিটাল ফোন টু-জি বা দ্বিতীয় প্রজন্ম এর জন্য। বাংলাদেশের মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কগুলো এখনও টু-জি, এবং সরকার চিন্তা ভাবনা করছে এক সাথেই থ্রি-জি এবং ফোর-জি'র লাইসেন্স দিয়ে দেবে। কিন্তু প্রযুক্তিগতভাবে টু-জি পর্যন্ত বিষয়গুলো সাদামাটাই ছিল। এর পরে এসেই বিষয়টা একটু জটিলাকার ধারণ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক, অথবা থ্রিজি চালু হয় ২০০৩ সালে। সে সময় এর সুসংগত সর্বনিম্ন ইন্টারনেটের গতি ছিল ১৪৪ কিলো-বিটসেকেন্ড। সে সময় ধারণা করা হয়েছিল এর মধ্যে দিয়েই "মোবাইল ব্রডব্যান্ড" চালু হবে। কিন্তু বর্তমানে নানা ধরনের থ্রি-জি চালু রয়েছে। এবং এই "থ্রি-জি" সংযোগ মানে ইন্টারনেট গতি ৪০০ কেবিপিএস থেকে এর চাইতে দশ গুণ বেশিও পেতে পারেন। সাধারণত নতুন প্রজন্ম নিয়ে আসে নতুন বেজ প্রযুক্তি, প্রতি ব্যবহারকারী হিসেবে নেটওয়ার্কের আরো বেশি তথ্য ধারণক্ষমতা এবং আরো ভালো ভয়েস পাঠানোর সুবিধা। সে হিসেবে ফোর-জি মানে আরো দ্রুত গতি সম্পন্ন বলে অনুমান করা যায়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ব্যাপারটা সবসময় এরকম নয়। ফোর-জি নামধারী প্রযুক্তির শুধু যে অভাব নেই তা নয়, নানাভাবে এই প্রযুক্তিটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব। আর তাই ফোরজি টার্মটি হয়ে পড়েছে প্রায় অর্থহীন। মান নির্ধারণের সংস্থা আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন, ফোর-জি নামকরণের একটা নির্দিষ্ট মাপকাঠি তৈরি করে দেয়ার প্রচেষ্টা করেছে, কিন্তু এর ক্যারিয়াররা বার বার তা উপেক্ষা করায় শেষ পর্যন্ত আইটিইউ পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়। চতুর্থ প্রজন্মের প্রযুক্তি বলতে আসলে একক কোনও প্রযুক্তি নেই - তিনটি উপায়ে এই ফোর-জি বাস্তবায়ন করা হয়েছে, সেগুলো হলো এইচএসপিএ+ ২১৪২, ওয়াইম্যাক্স এবং এলটিই। যদিও কিছু মানুষ এলটিইকেই শুধু চতুর্থ প্রজন্মের প্রযুক্তি বলে মনে করে থাকেন। আবার কেউ কেউ বলে এদের কেউ চতুর্থ প্রজন্মের যে গতি থাকার কথা তা দিতে সক্ষম নয়।